এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পেটব্যথা ও যন্ত্রণা নিয়ে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুইদিন অবজারভেশনে রেখে শিশুটির খাদ্যনালী থেকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হয়েছে জানালার ছিটকিনি। ওই শিশুর নাম হাবিব (২)। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের জুয়েল মিয়ার ছেলে। জুয়েলের তিন ছেলে সন্তানের মধ্যে হাবিব ছোট।
জানা যায়, গত ২ আগস্ট সকালে দুই বছরের হাবিবকে বিছানায় রেখে মা পাখি বেগম ঘরের বাইরে যান। এ সময় জানালা ধরে খেলা করছিল সে। কোনো কারণে জানালার ছিটকিনি তার হাতে খুলে আসে। অবুঝ শিশু হাবিব সেই ছিটকিনি গিলে ফেলে। এরপর শ্বাসকষ্টসহ পেটব্যথা ও যন্ত্রণায় আর্তনাদ করতে থাকে। এ অবস্থায় তাকে প্রথমে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে হাবিবের এক্স-রে করে দেখা যায় তার গলায় কিছু একটা আছে। সেখান থেকে দ্রুত বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আসার পর এক্সরে করে চিকিৎসকরা দেখেন পেটের ভেতর একটা ছিটকিনি। চিকিৎসকরা তাকে দুইদিন অবজারভেশনে রাখেন। দুইদিন পর গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাতে ডা. মো. আবু সাঈদ অপারেশন করে খাদ্যনালী থেকে একটি ছিটকিনি বের করেন।
হাবিবের মা পাখি বেগম বলেন, আমার ছেলেটি অনেক চঞ্চল। বুধবার (২ আগস্ট) সকালে তাকে আমি নাস্তা করিয়ে ঘরের বাইরে যাই। এসে দেখি তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তার মুখ খুলে প্রথমে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। পরে গলায় সাদা কিছু একটা দেখা যায় এবং মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। পরে হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অপারেশন করে তার খাদ্যনালী থেকে ছিটকিনি বের করা হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন হাবিব শঙ্কামুক্ত। তবে পুরোপুরি সুস্থতার জন্য আরও কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও হাবিবের অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক ডা. মো. আবু সাঈদ জানান, এক্স-রে রিপোর্টে শিশুটির পেটের খাদ্যনালীতে ছিটকিনি দেখা যায়। পেটের ভেতরে খাদ্যনালী প্রায় ২০ ফুট লম্বা থাকে। অস্ত্রোপচারের সময় খাদ্যনালীর ভেতর থেকে খুঁজে বের করা হয়েছে ছিটকিনিটি। তিনি আরও জানান, শিশুটির খাদ্যনালী কেটে ছিটকিনিটি বের করা হয়েছে। তা কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। তাকে আরও দুইদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে সে এখন সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত।